শ্রীনগর
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাচনে থাকছেন ১৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫শ সদস্য
শ্রীনগর পোস্ট ডেস্ক
মঙ্গলবার, ২৮ মে, ২০২৪, ১১:০৩ অপরাহ্ণ | 182 বার পড়া হয়েছে
আরিফ হোসেনঃ শ্রীনগর উপজেলা নির্বাচনের ভোট গ্রহন অবাধ ও নিরপেক্ষ করার জন্য দায়িত্ব পালন করছেন ১৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ প্লাটুন বিজিবি সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫ শ সদস্য। রাত পোহালেই শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৪টি ইউনিয়নের ৯৩টি ভোট কেন্দ্রে ভোট গ্রহন শুরু হবে। প্রাশাসনের হিসাব মতে, ৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। একারনে ভোট কেন্দ্র ও এর আশ পাশে সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রেখে ভোটারদেরকে নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রোয়োগের নিশ্চয়তা প্রদানের জন্য ইতিমধ্যে নিরাপত্তার নিছিদ্র বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।
শ্রীনগর থানার ওসি(তদন্ত)পারভেজ ওয়াহিদ জানান,২ প্লাটুন বিজিবি সহ পুলিশের প্রায় ৫ শ সদস্য ভোটের মাঠে কাজ করছে।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোট গ্রহন অবাধ ও সুষ্ঠ করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত রয়েছে এবং আমরা নিছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি।
শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোশারেফ হোসাইন বলেন, ১৪টি ইউনিয়নে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও কোলাপাড়া এবং বাঘড়া ইউনিয়নে অতিরিক্ত আরো ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট সহ মোট ১৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
গত কয়েকদিনে শ্রীনগর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে অভিন্য চিত্র। জনপ্রতিনিধিরা সরাসরি প্রার্থীদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যাওয়ায় এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীদের ভয়ে সাধারণ ভোটারা ভীত। সাধারণ ভোটারা মনে করছেন কেন্দ্র দখল করে ভোট হয়ে যেতে পারে। কেউ কেউ বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বলেন, কেন্দ্রের বাইরে অবস্থানরত প্রভাব শালীদের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে নিজের প্রার্থীদের ভোট প্রদান করা হয়তো সম্ভব হবে না। দোহার উপজেলা সংলগ্ন বাঘড়া এলাকার এক নিজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দোহারে সীমানা ঘেষা হওয়ায় সেই উপজেলার এক প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের নেতার অত্নীয় পরিচয়ে বাঘড়া ১ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রকাশ্যে সীল মারার কানাঘুষা চলছে। এছাড়া কেন্দ্রের বাইরে থেকে ওই ইউনিয়নের এক সদস্যের রক্ত চক্ষুর কাছে অনেকেই সীল মেরে তার ছবি তুলে এনে দেখাতে বাধ্য করে। বিগত নির্বাচনে দেখা গেছে একারনে সেখানকার ভোটাররা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন না।
একই ইউনিয়নের আলামিন বাজারের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন,কাঠালবাড়ী আশ্রাফিয়া হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রে ওই এলাকার এক প্রভাবশালী মতুব্বর তার আত্নীয় স্বজনদেরকে এজেন্ট বানিয়ে সেখানে শক্ত ঘাটি গেড়ে বসেন। তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিতে পারে এমন সন্দেহ হলে প্রকাশ্যে ভোট দিতে বাধ্য করেন। যদি কেউ এর ব্যাত্যয় করেন তাহলে তার উপর নির্বাচন পরবর্তী নির্যাতন শুরু হয়।
হাঁসাড়া হোসেন আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রভাব পরতে পারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির এক নেতার। সেখানকার ভোটারদেরকে কেন্দ্রের ভেতরে প্রভাবিত করার শংকার কথা বেশ কয়েকজন ভোটার জানান। হাঁসাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এক পছন্দের প্রার্থীর আশানুরুপ ভোট না পরতে দেখলে নিজেরাই মারামারি করে ভোট বাতিলের দাবী তুলতে পারেন বলে এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী শংকা প্রকাশ করেন। উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই প্রভাবশালীদের প্রভাব বিস্তারের শঙ্কা রয়েছে। এসকল শঙ্কাকে দুর করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানায়,কোন নেতা,জন প্রতিনিধি সহ কাউকে দলবদ্ধ ভাবে অবস্থান নিতে দেখলেই এ্যাকশন শুরু হবে। ভোট কেন্দ্র দখলের প্রশ্নই অসবে না।
চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বদ্বীতা কারী একজন প্রার্থীর মূখপাত্র জানান, প্রার্থীর এজেন্টেরকে তাদের প্রতিটি বুথের গ্রহন করা ভোটের হিসাব রাখতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রের বুথগুলোতে কত ভোট গ্রহন করা হয়েছে তার মোট হিসাব সেই প্রার্থীর এজেন্টরা রাখবে। যদি গ্রহন করা ভোটের হিসাবে গরমিল দেখা দেয় বা কেউ জাল ভোট দেওয়ার চেস্টা করে তাহলে সাথে সাথে প্রতিবাদ করা হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা চাই অবাধ ভোট গ্রহনের মাধ্যমে জয় পরাজয় নিশ্চিত হউক।
কেউ কেউ লৌহজং উপজেলার ভোট গ্রহনের উদাহরন টেনে বলেন, ভোট গ্রহন হয়তো নিরপেক্ষ হবে। শ্রীনগর উপজেলায় ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৫৭ হাজার। তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত করাই বড় চ্যালেঞ্চ।
মন্তব্য