অপরাধনামা
শ্রীনগরে ছুরিকাঘাতে স্কুল ছাত্র নিরব হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্য আটক
শ্রীনগর পোস্ট ডেস্ক
শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১১:৪০ অপরাহ্ণ | 3419 বার পড়া হয়েছে
আরিফ হোসেনঃ শ্রীনগরে ছাত্রীদের উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ছরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিরব হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীনগর থানা পুলিশ। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর ৪জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আটককৃতরা হলো শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া মাগডাল এলাকার মনু মিয়ার ছেলে রাজিব(১৭),আক্কাস আলী মৃধার ছেলে তাহসান(১৪), একই এলাকার সুমির ছেলে রুদ্র(১৪), অপরজন পশ্চিম কামারগাও এলাকার মোঃ রাশেদের ছেলে শাওন(১৪)। ঘটনাস্থলের রাস্তায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে হামলা কারীদের সংঘবদ্ধ চলাচল দেখে পুলিশ রাত ৯টা থেকে ১০ টার মধ্যে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মোঃ তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন,আটককৃতদের যাচাই বাছাই চলছে।
শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কামারগাও চৌধুরীবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে বখাটে কিশোর গ্যাংয়ের ছুরিকাঘাতে নিরব নিহত হয়।
গত বৃহস্পতিবার কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান চলাকালে বাঘড়া ইউনিয়নের মাগডাল এলাকার অরেফিনের নেতৃত্বে কয়েকজন বখাটে স্কুলের ছাত্রীদের উত্যক্ত করতে থাকে। নিরব ও কাজী অহিদুল এসময় উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেদের সাথে তাদের বাক বিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে বখাটেরা দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। এর জের ধরে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রায় একশ গজ পশ্চিমে কামারগাও চৌধুরীবাড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের পাশে এসে বখাটে আরেফিন সহ কয়েকজন মিলে নিরবকে ছুরিকাঘাত করে পার্শ্ববর্তী খালে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা নিরবকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। হামলার সময় নিরবের বন্ধু কাজী অহিদুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে রক্ষা পায়।
ভাগ্যকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কামারগাও কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাজী মনোয়ার হেসেন বলেন, আরেফিন কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িত। বৃহস্পতিবারের স্কুলের খেলার সময় আরেফিন গং এসে ঝামেলা করে। পরে আমি তা মিমাংসা করে দেই। বৃহস্পতিবারের ঘটনার জেরে আর তারা নীরবকে তারা হত্যা করেছে।
নিরব চাদপুরের মৃত দেলোয়ার হোসেনের পুত্র। বাবার মৃত্যুর পর নিরবের মা তার ২ সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ী কামারগাওয়ে চলে আসেন। নিরব কামারগাও কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর লৌহজংয়ে তার খালার বাড়িতে চলে যায় এবং গত বছর লৌহজং পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ফেল করে। এই বছর কামারগাও মামার বাড়ীতে থেকে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগে নিরবের খুনের ঘটনায় তার বিধবা মা সহ পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মন্তব্য