জাতীয়
শ্রীনগরে জবাই করা নিরাপত্তা কর্মীর লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে আটক ৩ খুনি
শ্রীনগর পোস্ট ডেস্ক
শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ | 363 বার পড়া হয়েছে
আরিফ হোসেন- শ্রীনগরে লিজেন্ড স্টিল রি রোলিং মিল থেকে নিরাপত্তা কর্মী আব্দুল কুদ্দুসের(৫০) গলা কাটা লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৩ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার ভোর রাতে মাদারিপুর থেকে ২ জনকে ও সকালে মাগুরা থেকে ১জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(শ্রীনগর সার্কেল) তোফায়েল হোসেন সরকার শনিবার বিকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান,গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম লিটন(৪০),রতন হোসেন(৩৪) ও জাবেদ হোসেন(৪৩) হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
গত শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের সুরদিয়া গ্রামের মিলটি থেকে নিরাপত্তা কর্মী আব্দুল কুদ্দুস (৫০) এর লাশটি উদ্ধার করা হয়। আব্দুল কুদ্দুসের খালি গায়ের গলাকাটা লাশটি একটি প্লাস্টিকের চেয়ারে বসানো ছিল এবং তার দুই হাত চেয়ারের হাতলের সাথে বাধা ছিল। শুক্রবার বিকালে স্থানীয়রা লাশটি দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে সিসি ক্যামেরা থেকে দেখা যায় বৃহস্পতিবার রাত দশটার পর একটি সিএনজি অটোরিক্সা মিলের সামনে এসে থামে। এসময় শহিদুল,রতন ও জাবেদ নাইটগার্ড আব্দুল কুদ্দুসকে ডেকে তুলে। রাতের কোন এক সময় তারা আব্দুল কুদ্দুসকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। আব্দুল কুদ্দুস ঝালকাঠির বাসিন্দা। সে পরিবার নিয়ে ঢাকার জুরাই এলাকায় বসবাস করতো। সে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলে শারীরীক প্রতিবন্ধী।
গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী শহিদুল ইসলাম লিটন মিলটিতে কাঁচামাল সরবরাহ করতো। মিলের মালিক মাহাথির উদ্দিন রাতুলের কাছে শহিদুলের টাকা পাওনা হয়। বেশ কয়েকবার তাগিদ দিয়েও টাকা না পাওয়ায় শহিদুল ধারনা করে সিকিউরিটি গার্ড আব্দুল কুদ্দুস সহ মিলের অন্য কর্মচারীরা তার টাকা কৌশলে মেরে দিয়েছে। এই ধারণা থেকে তার ক্ষোভ জন্মে। ক্ষোভ থেকেই আব্দুল কুদ্দুসকে গলা কেটে হত্যা করে শহিদুল,রতন ও জাবেদ পালিয়ে গিয়েছিল। এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) ওয়াহিদ পারভেজ,এসআই অঙ্কুর ভট্টাচার্য সহ একটি টিম ও মুন্সীগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নেমে শনিবার ভোরে মাদারীপুর ও সকালে মাগুরা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
শহিদুল ইসলাম লিটনের বাড়ি শরিয়তপুরের জাজিরা থানার সেনেরচর বড় গোপালপুর এলাকায়। তার বাবার নাম হালিম মাতুব্বর। সে কেরাণীগঞ্জের বেড়া তেঘরিয়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতো। রতন হোসেন জাজিরা থানার নিঝুক মার্কেট এলাকার বাসিন্দা। অপরদিকে জাবেদ মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয় খন্ড মাদবর বাড়ী এলাকার রশিদ মাদবরের ছেলে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার বলেন, লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘন্টার আগেই আমরা হত্যাকারী ৩ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের মধ্যে রতন লাল শালু কাপড় পরে বিভিন্ন সময় ছদ্মবেশ ধারণ করে মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়ায়। ধারণা করা হচ্ছে তারা পেশাদার ক্রিমিনাল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। সংবাদ সম্মেলনে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য