অপরাধনামা
শ্রীনগরে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যাঃ পরকিয়া প্রেমিকের ফাঁসির আদেশ
শ্রীনগর পোস্ট ডেস্ক
বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৩, ৪:২০ অপরাহ্ণ | 841 বার পড়া হয়েছে
আরিফ হোসেনঃ শ্রীনগরে স্কুল ছাত্রী লায়লা আক্তার লিমুকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় পরকিয়া প্রেমিক খোকনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২ টায় মুন্সীগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক ফাইজুন্নেসা এ রায় দেন। এ সময় আসামি খোকন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের দিকে বাড়ৈখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী লিমুর(১৭)সাথে বাড়ৈখালী বাজারের চাঁন সুপার মার্কেটের দর্জিঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক দুই সন্তানের জনক খোকনের(৪০) পরকিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে । প্রেমের কারণে লিমু প্রায়ই খোকনের দোকানে যাওয়া আসা করতো। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে কানাঘুষা ছিল।
২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট বিকালে লিমু ওই দোকানে গিয়ে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য খোকনের কাছে বায়না ধরে। খোকন টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লিমুকে দোকানে রেখে দেয়। রাতভর ফুর্তি করে ভোরে লিমুকে দোকান থেকে চলে যেতে বললে সে টাকা দাবী করে। এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে খোকন লিমুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ দোকানের র্যাকের ভেতর রেখে দেয়। দুইদিন লাশ রেখেই সে স্বাভাবির ভাবে দোকানদারী করে। পরে পচা গন্ধ বের হলে খোকন দোকানে সুগন্ধি স্প্রে করে। তিন দিনের মাথায় রাত ১১ টার দিকে লিমুর লাশ বস্তার মুড়ে সে মার্কেটের ছাদ থেকে নিচে ইছামতি নদীর পারে ফেলে দেয় । পরদিন স্থানীয়রা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে এবং মালামাল পরিবহনের বড় আকৃতির বস্তা দেখে সন্দেহ করে মার্কেটের কেউ এই কাজ করতে পারে। পরে মার্কেটের দোকানীরা পুলিশকে জানায় লিমু প্রায়ই খোকনের দোকানে আসতো। তাদের সম্পর্ক নিয়ে দোকানীরা কানাঘুষা করতো। এর সূত্র ধরে পুলিশ খোকনের দোকানে তল্লাশি করে রক্তের দাগ ও লাশ পচা গন্ধ পেয়ে নিশ্চিত হয় এখানেই লাশটি ছিল। ততক্ষনে খোকন পালিয়ে যায়। এঘটনায় লিমুর বাবা আঃ মতিন বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তৎকালীন মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মাকসুদা লিমার নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করে গাজীপুর থেকে খোকনকে গ্রেপ্তার করা হলে সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে পুরো ঘটনা খুলে বলে। খোকনের বাড়ি সিরাজদিখান উপজেলার পাউসার গ্রামে। সে ২ ছেলে সন্তানের জনক। মামলাটি তদন্ত করে শ্রীনগর থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ মাসুদুর রহমান চার্জশিট প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্র পক্ষের পিপি এডভোকেট লাভলু মোল্লা বলেন, ভিকটিমকে ধর্ষন করে খুণ করার অভিযোগ ২০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য ও প্রমানের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে মামলাটি প্রমানিত হওয়ায় আসামীকে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। রাস্ট্র পক্ষের পিপি হিসাবে এ রায়ে আমি সন্তোষ প্রকাশ করছি।
মন্তব্য