
রাজনীতি
১০ বছর পর শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনঃ সভাপতি এলাকায় নেই ৬ বছর
শ্রীনগর পোস্ট ডেস্ক
বুধবার, ৩ মে, ২০২৩, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ | 584 বার পড়া হয়েছে



আরিফ হোসেনঃ শ্রীনগরে ১০ বছর হচ্ছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। আগামী ২০ মে শ্রীনগর স্টেডিয়ামে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কয়েক মাস ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাপ শুরু হলেও তারিখ ঘোষণা নিয়ে ছিল ধোয়াশা। তবে গত ২৯ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ভেন্যু হিসাবে শ্রীনগর স্টেডিয়ামকে চুড়ান্ত করা হলে সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ২২ ডিসেম্বর শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সভাপতি হন মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জন ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক হন মোঃ তোফাজ্জল হোসেন। সুকুমার রঞ্জন ঘোষ এর আগেও দলটির শ্রীনগর উপজেলার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৬ মার্চ তার গ্রুপের সাথে মোঃ মসিউর রহমান মামুন-গোলাম সারোয়ার কবির গ্রুপের ঘন্টা ব্যাপি সংর্ঘষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে তিনি ঝুমুর সিনেমা হলের সামনে এসে নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেওয়ার সময় অসুস্থ্য হয়ে পরেন। তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। সুকুমার রঞ্জন ঘোষের সুস্থ্য হওয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলেন তার অনুসারীরা। এর ১০ মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারী সুকুমার রঞ্জন ঘোষ মুন্সীগঞ্জের একটি সভায় যোগ দেওয়ার জন্য রওনা হন। এই খবরে প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী ছনবাড়ি বাসষ্ট্যান্ডে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু কালো গ্লাসের গাড়িতে বসা তৎকালীন এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষ কারো সাথে কথা বলেননি। এমনকি তিনি গাড়ির গ্লাস পর্যন্ত খুলেননি। এই ঘটনার পর তার অনুসারী অনেক নেতাকর্মী হতাশ হয়ে পরেন। সুকুমার রঞ্জন ঘোষও এর পর থেকে আর শ্রীনগর মুখী হননি। এই ৬ বছর ধরে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ তোফাজ্জল হোসেনই কার্যত দলটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন ।
অপর একটি সূত্র জানায় সুকুমার রঞ্জন ঘোষের অনুপুস্থিতি এই আসনে বিকল্পধারা থেকে শরীক দলের প্রার্থী নির্বাচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। দেশে দল ক্ষমতায়, শ্রীনগরে শরীক দলের এমপি। তারপরও সভাপতি বিহীন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কোনঠাসা কয়েক বছর ধরে। নিজ দলের বিদ্রোহী পক্ষ ও শরিক দলের এমপির বিমাতা শুলভ আচরণের কারণে সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে নেতাকর্মীদেরকে সুসংগঠিত করে রাখা কষ্ট সাধ্য হয়ে পরে। দল ক্ষমতায় থাকার পরও উপজেলা প্রশাসন,থানা সহ বিভিন্ন দপ্তরে কোন প্রভাব রাখতে না পারার কারনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনেককেই হতাশ করে তুলে। এর প্রেক্ষিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা মিলে গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ফোরাম তৈরি করেন। তাদের একটি সূত্র জানায়, মূলত নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যই তারা এই ফোরাম গঠন করতে হয়েছে। নেতা কর্মীদের হতাশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বিভিন্ন রকম স্ট্যাটাসে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে।
আগামী ২০ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে ঘিরে হতাশ নেতাকর্মীরা এখন সংগঠিত আওয়ামী লীগের স্বপ্ন বুনছে। ইতিমধ্যে সভাপতি পদে প্রায় ১ হালি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রায় হাফ ডজন প্রার্থী দৌড় ঝাপ শুরু করেছেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন কাউন্সিলর তৈরি করতে। অনেকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন অন্য দল বা হাইব্রিড কাউকে কাউন্সিলর বানানো হয় কিনা।
গত ৬ বছর সুকুমার রঞ্জন ঘোষ অসুস্থ্য হয়ে এলাকায় না আসলেও তার সন্মানে কাউকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির পদে বসানো হয়নি। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন সভায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন দলটির সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ¦ সেলিম আহমেদ ভূইয়া।
শ্রীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, সভাপতি বিহীন ৬ বছর নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে রেখেছি। এটা খুবই কষ্ট সাধ্য ছিল। তার উপর বিদ্রোহী গ্রুপটি আমাকে কখনোই সহায়তা করেনি। তোফাজ্জল হোসেন আশা করেন, সম্মেলন সফল ও সার্থক হবে। এজন্য তিনি কাউন্সিলরদের কাছে সহযোগীতা কামনা করেন।




রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন



রাজনীতি সর্বাধিক পঠিত

মন্তব্য